কোচিং বাণিজ্য কি তা আমরা সকলেই জানি।তাই আর ভূমিকা না দিয়ে আসল সংবাদটাই বলে ফেলি,সরকার কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য চূড়ান্ত নীতিমালা করেছেন।
নীতিমালা গুলো নিচে উল্লেখ্য করা হলঃ-
১। সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা নিজ প্রতিষ্ঠানের (অর্থ্যাৎ যে প্রতিষ্ঠানে তিনি কর্মরত) শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতে বা কোচিং করাতে পারবেন না।
২।এছাড়া শিক্ষকেরা বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে পড়াতে পারবেন না।এমন কি কোন সেন্টারে পড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের উসাহিত বা বাধ্য করতে পারবেন না।
৩।একদিনে অন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জন শিক্ষার্থীকে নিজ বাসায় পড়াতে পারবেন।অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিজ বাসায় পড়ানোর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি নিতে হবে।
৪।যে কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান অভিভাবকদের আবেদনের ভিত্তিতে তাদের দূর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের অতিরিক্ত ক্লাস করিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে বা পরে সরকার নির্ধারিত ফি(Fee) নিতে পারবে।*
[*প্রতি মাসে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিষয় প্রতিঃ মহানগরে ৩০০/= টাকা , জেলা শহরে ২০০/= টাকা , উপজেলা ও অন্যান্য জায়গায় ১৫০/= টাকা করে নেওয়া হবে।এই টাকার ১০% উক্ত প্রতিষ্ঠানের পানি,বিদ্যুৎ বা সহায়ক কর্মচারীর ব্যয় বাবদ কেটে নেওয়া হবে,বাকি টাকা অতিরিক্ত ক্লাসে নিয়োজিত শিক্ষকদের দেওয়া হবে। এবং প্রতি মাসে কমপক্ষে প্রতি বিষয়ে ১২ টি ক্লাস নিতেই হবে কোন ভাবেই এর কম নেওয়া যাবে না তবে ইচ্ছা করলে বেশী নিতে পারবে]
এই নীতিমালা কিছু একটাও যদি উল্টা-পাল্টা হয়,তাইলেই কিন্তু খবর আসে!! শাস্তি কি দেওয়া হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলঃ
১।বেসরকারী শিক্ষকদের এমপিও বাতিল বা স্থগিত করা হবে।
২।বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক স্বীকৃতি বা অনুমোদন বাতিল করা হবে।যদি তারা তাঁদের একাডেমির শিক্ষকদের ব্যপারে ব্যবস্থা না নেয়।
৩।সরকারী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অসদাচরণের দায়ে শৃংখলা ও আপিল বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশিষ্টজনদের বক্তব্যঃ-
-
শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ ভাই বলেন “কোচিং বাণিজ্য দেশের বড় সমস্যা।আমাদের উদ্দেশ্য কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা।দেশে এই প্রথম কোচিংয়ের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।এ জন্য আভিভাবক সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে।আর বাণিজ্যিক ভাবে পরিচালিত কোচিংয়ের বিষয়ে আলাদা নীতিমালা করা হবে।”
-
শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ “এখন কোচিংমুখী হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের পড়ালেখা।আনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীকে তাঁদের কাছে পড়তে চাপ দেন।পড়লে বেশী নম্বর দেন,প্রশ্ন বলে দেন।এতে শিক্ষার্থীদের হৃদয়ের উপর চাপ পড়ে।নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়ানোর সুযোগ থাকায় এ সমস্যা বেশি হচ্ছে।এখান থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফিরিয়ে আনার জন্যইএই চেষ্টা।এর বাস্তবায়ন করতে হবে।”
ঢাকার সেরা দুই স্কুলের অধ্যক্ষের বক্তব্যঃ-
-
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন “আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষকদের বলব।তবে আমার মনে হয় শিক্ষকেরা এটা না-ও মানতে পারেন।”
-
ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন “প্রতিষ্ঠানের ভেতর অতিরিক্ত ক্লাস করার সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানাই।প্রতি বিষয়ে ৩০০ টাকা করে রাখার সিদ্ধান্ত বেশিই মনে হয়েছে।কারণ,কোনো শিক্ষার্থী সবকটি বিষয় পড়লে এই টাকা অনেক হয়ে যাবে।তবে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের না পড়ানো সিদ্ধান্ত সঠিক মনে হয়নি”
এই হল কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা ২০১২। নিজে জানুন। অন্য সবাইকেও জানান।
সবাই ভালো থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ।