LAST UPDATED: MAR 15, 2023
২৮ ডিসেম্বর ২০২২ এ মেট্রোরেল ( এমআরটি লাইন-৬) এর উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এর মাধ্যমে বাংলাদেশ এর ইতিহাসে যুক্ত হল নতুন এক মাইল ফলক। ঢাকা শহরের চিরচেনা যানজট এড়াতে মেট্রোরেল প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১২ সালে। ২০১৭ সালে কাজ শুরু হয়েছিলো মেট্রোরেলের। মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।
Table of contents
Open Table of contents
এক নজরে মেট্রোরেল প্রকল্প
- কাজ শুরুঃ ২০১৭
- সবোর্চ গতিঃ ১০০কিমি/ঘন্টা
- দৈর্ঘ্যঃ উত্তরা থেকে কমলাপুর প্রায় ২২ কিমি
- ভাড়াঃ সর্বনিম্ন ২০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১০০ টাকা
- সহযোগী প্রতিষ্ঠানঃ জাইকা - জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি
- প্রকল্পব্যয়ঃ ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা
- ষ্টেশন সংখ্যাঃ ১৭ টি (উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর)
- যাত্রী পরিবহন ক্ষমতাঃ ঘন্টায় ৬০ হাজার এবং প্রতিদিন ৫ লক্ষ
- শীতাতপ নিয়ন্ত্রনঃ প্রতিটি কোচ এসি।
- সাপ্তাহিক বন্ধঃ মঙ্গলবার।
- অর্থায়নঃ বাংলাদেশ সরকার ২৫% ও জাইকা ৭৫%।
মেট্রোরেলের ভাড়ার তালিকা
মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। এরপর প্রতি দুই স্টেশন পর ১০ টাকা করে ভাড়া যোগ হবে। উত্তরা স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভাড়া হবে ৬০ টাকা।
উত্তরা নর্থ থেকে:
- উত্তরা সেন্টার ২০ টাকা,
- উত্তরা সাউথ ২০ টাকা,
- পল্লবী ৩০ টাকা,
- মিরপুর-১১ নম্বর ৩০ টাকা,
- মিরপুর-১০ নম্বর ৪০ টাকা,
- কাজীপাড়া ৪০ টাকা,
- শেওড়াপাড়া ৫০ টাকা এবং
- আগারগাঁও ৬০ টাকা।
উত্তরা সেন্টার থেকে:
- উত্তরা নর্থ ২০ টাকা,
- উত্তরা সাউথ ২০ টাকা,
- পল্লবী ২০ টাকা,
- মিরপুর-১১ নম্বর ৩০ টাকা,
- মিরপুর-১০ নম্বর ৩০ টাকা,
- কাজীপাড়া ৪০ টাকা,
- শেওড়াপাড়া ৪০ টাকা এবং
- আগারগাঁও ৫০ টাকা।
উত্তরা সাউথ থেকে:
- উত্তরা সেন্টার ২০ টাকা,
- উত্তরা নর্থ ২০ টাকা,
- পল্লবী ২০ টাকা,
- মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা,
- মিরপুর-১০ নম্বর ৩০ টাকা,
- কাজীপাড়া ৩০ টাকা,
- শেওড়াপাড়া ৪০ টাকা এবং
- আগারগাঁও ৪০ টাকা।
পল্লবী থেকে:
- উত্তরা সাউথ ২০ টাকা,
- উত্তরা সেন্টার ২০ টাকা,
- উত্তরা নর্থ ৩০ টাকা,
- মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা,
- মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা,
- কাজীপাড়া ২০ টাকা,
- শেওড়াপাড়া ৩০ টাকা এবং
- আগারগাঁও ৩০ টাকা।
মিরপুর-১১ নম্বর থেকে:
-
পল্লবী ২০ টাকা,
-
উত্তরা সাউথ ২০ টাকা,
-
উত্তরা সেন্টার ৩০ টাকা,
-
উত্তরা নর্থ ৩০ টাকা,
-
মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা,
-
কাজীপাড়া ২০ টাকা,
-
শেওড়াপাড়া ৩০ টাকা এবং
-
আগারগাঁও ৩০ টাকা।
মিরপুর-১০ নম্বর থেকে:
-
মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা,
-
পল্লবী ২০ টাকা,
-
উত্তরা সাউথ ৩০ টাকা,
-
উত্তরা সেন্টার ৩০ টাকা,
-
উত্তরা নর্থ ৪০ টাকা,
-
কাজীপাড়া ২০ টাকা,
-
শেওড়াপাড়া ২০ টাকা এবং
-
আগারগাঁও ২০ টাকা।
কাজীপাড়া থেকে:
-
মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা,
-
মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা,
-
পল্লবী ২০ টাকা,
-
উত্তরা সাউথ ৩০ টাকা,
-
উত্তরা সেন্টার ৪০ টাকা,
-
উত্তরা নর্থ ৪০ টাকা,
-
শেওড়াপাড়া ২০ টাকা এবং
-
আগারগাঁও ২০ টাকা।
শেওড়াপাড়া থেকে:
-
কাজীপাড়া ২০ টাকা,
-
মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা,
-
মিরপুর-১১ নম্বর ২০ টাকা,
-
পল্লবী ৩০ টাকা,
-
উত্তরা সাউথ ৪০ টাকা,
-
উত্তরা সেন্টার ৪০ টাকা,
-
উত্তরা নর্থ ৫০ টাকা এবং
-
আগারগাঁও ২০ টাকা।
আগারগাঁও থেকে:
- শেওড়াপাড়া ২০ টাকা,
- কাজীপাড়া ২০ টাকা,
- মিরপুর-১০ নম্বর ২০ টাকা,
- মিরপুর-১১ নম্বর ৩০ টাকা,
- পল্লবী ৩০ টাকা,
- উত্তরা সাউথ ৪০ টাকা,
- উত্তরা সেন্টার ৫০ টাকা এবং
- উত্তরা নর্থ ৬০ টাকা।

মেট্রোরেলের টিকিট / কার্ড কিভাবে নেওয়া যাবে
প্রথম দিকে স্থায়ী ও সিঙ্গেল জার্নি এর জন্য কার্ড মেট্রোরেল স্টেশন থেকেই কিনতে হবে। পরবর্তিতে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও অনলাইনে রিচার্জ / কেনা যাবে। মেট্রোরেলের টিকিট / কার্ড দুইরকম
-
স্থায়ী কার্ডঃ ১০ বছর মেয়াদি স্থায়ী কার্ড কিনতে হবে ২০০ টাকা দিয়ে। যাতায়াতের জন্য টাকা রিচার্জ করে নিতে হবে প্রয়োজন মত। স্থায়ী কার্ড পেতে নিবন্ধন করতে হবে। ঢাকা মেট্রোরেল এর স্থায়ী পাস কার্ড এর নিবন্ধন ফর্ম নিচে দেয়া হল।
-
সিঙ্গেল জার্নি কার্ডঃ নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করে নিতে হবে। ট্রেন থেকে নামার সময় সেটা ফিরিয়ে নেয়া হবে যাত্রীর কাছ থেকে। কার্ড দেয়া ছাড়া ষ্টেশন থেকে বের হতে পারবেন না।
টিকিট / কার্ড সংক্রান্ত আরো কিছু তথ্যঃ
- শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার সুবিধা থাকছে না। তবে স্থায়ী কার্ড নিলে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট পাবে সবাই।
- Ticket Office Machine (TOM) হতে বিক্রয়কারীর সহায়তায় Single Journey Ticket এবং MRT Pass ক্রয় করা যাবে।
- Ticket Vending Machine (TVM) হতে যাত্রীসাধারণ নিজে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেও Single Journey Ticket ক্রয় এবং MRT Pass Top-up করতে পারবেন। Mobile ও Web Applications-এর মাধ্যমেও MRT Pass Top-up করা যাবে।
- ভ্রমন দূরত্ব অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করে Single Journey Ticket ক্রয় করা যাবে।
- MRT Pass এবং Rapid Pass হতে ভ্রমন দূরত্ব অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত ভাড়া কর্তন করা হবে।
- যে কোনো সময় যাত্রীসাধারণ MRT Pass ফেরত দিয়ে জমানতের অর্থ ও অব্যবহৃত অর্থ ফেরত নিতে পারবেন।
মেট্রোরেলের পাস হারিয়ে গেলে কি করতে হবে
MRT Pass হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে রেজিস্টার্ড কার্ডের বাহককে জামানত পরিশোধ করে নতুন MRT Pass গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে অব্যবহৃত অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন MRT Pass এ স্থানান্তরিত হবে। MRT Pass হারিয়ে গেলে নিকটস্থ স্টেশনের TOM অপারেটরকে অবহিত করে রেজিস্টার্ড কার্ডের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করা যাবে।
মেট্রোরেলের ষ্টেশন সমুহ
Station | স্টেশন |
---|---|
Uttara North | উত্তরা উত্তর |
Uttara Center | উত্তরা কেন্দ্র |
Uttara South | উত্তরা দক্ষিণ |
Pallabi | পল্লবী |
Mirpur-11 | মিরপুর-১১ |
Mirpur-10 | মিরপুর-১০ |
Kazipara | কাজীপাড়া |
Shewrapara | শেওড়াপাড়া |
Agargaon | আগারগাঁও |
Bijoy Sarawni | বিজয় স্বরণী |
Framgate | ফার্মগেট |
Karwan Bazar | কারওয়ান বাজার |
Shahbag | শাহবাগ |
Dhaka University | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
Bangladesh Secretariat | বাংলাদেশ সচিবালয় |
Motijheel | মতিঝিল |

মেট্রোরেলের সময়সূচি
উদ্বোধনের পর থেকে প্রথম কিছুদিন সকাল ৮.৩০টা থেকে দুপুর ১২.৩০টা পর্যন্ত চলাচল করবে মেট্রোরেল। তবে গেট খোলা হবে ৮টা থেকে আর বন্ধ হবে ১২টায়। জুলাই মাস থেকে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মেট্রোরেল চালানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
- উদ্বোধনের পর উত্তরা ও আগারগাঁও ষ্টেশনে থামছে।
- ২৫ জানুয়ারী ২০২৩ থেকে থামছে পল্লবী স্টেশনে।
- ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ থেকে থামছে উত্তরা সেন্টার বা দুই নম্বর স্টেশনে।
- ১ মার্চ ২০২৩ থেকে থামছে মিরপুর ১০ নম্বর স্টেশনে।
- ১৫ মার্চ ২০২৩ থেকে থামছে কাজীপাড়া ও মিরপুর-১১ স্টেশনে।
- মার্চ ২০২৩ এর শেষের দিকে উত্তরা দক্ষিণ ও শেওড়াপাড়া স্টেশন দুটিও যাত্রীদের জন্য খুলে দেয়া হবে।
ধীরে ধীরে মেট্রোরেল চলাচলের সময় ও ট্রেন সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রতি স্টেশনে যাত্রীদের ওঠানামার জন্য ১০ মিনিট করে থেমে থাকবে ট্রেন।
মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা
- মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে Communication Based Train Control System (CBTC) Automatic Train Operation (ATO), Automatic Train Protection (ATP), Automatic Train Supervision (ATS) ও Moving Block System (MBS) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- যাত্রীদের নিরাপত্তার নিমিত্ত Synchronized Platform Screen Door (PSD) and Train Door এবং সিসি ক্যামেরা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জরুরী মুহুর্তে বের হতে ইমার্জেন্সি এক্সিট রয়েছে।
- অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা হিসেবে স্বয়ংক্রিয় Sprinkler ও Water Hydrant সংযোজনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
- মেট্রোরেলে যাতায়াতকারী যাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে স্বতন্ত্র বিশেষায়িত MRT Police Force গঠনের কার্যক্রম চলমান আছে। তার আগ পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নিরাপত্তা প্রদান করবে।
দেশের প্রথম নারী মেট্রোরেল চালক
দেশের প্রথম নারী মেট্রোরেল চালক লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের মরিয়ম আফিজা। তিনি স্নাতকোত্তর পাস করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে।

মেট্রোরেল ষ্টেশন এ জাপানিজ ইঞ্জিনিয়ারদের নাম
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রান্সজিট প্রকল্পে কর্মরত অবস্থায় ০১ জুলাই ২০১৬ তারিখে নিহত হন সাত জাপানিজ প্রকৌশলী। এই সাত ইঞ্জিনিয়ারদের নাম হলোঃ
- হাসিমোতো হিদেকি
- কুরোসাকি নোবুহিরো
- ওগাসাওয়ারা কোয়ো
- ওকামুরো মাকোতো
- সাকাই ইউকো
- শিমোদাইরা রুই
- তানাকা হিরোশি
তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মেট্রোরেলের ষ্টেশন এ তিন ভাষায় (বাংলা, ইংরেজি ও জাপানিজ) তাদের নাম পাথরে খোদাই করা আছে।

মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্র
ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়িতে রয়েছে একটি মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্র। এর সময়সূচি ও অন্যান্য তথ্য নিচে দেয়া হলো
- প্রদর্শনী সময়ঃ সোমবার থেকে শনিবার সকাল ১০.৩০ মিনিট, দুপুর ১২.০০ টা এবং বিকাল ৩.০০ টা
- সাপ্তাহিক বন্ধঃ রবিবার
- প্রদর্শনীর বিষয়াদিঃ ভিডিও, এ্যানিমেটেড কার্টুন, স্বয়ংক্রিয় টিকেট মেশিন ব্যবহার পদ্ধতি, ম্যানুয়াল টিকিট সংগ্রহ পদ্ধতি, মেট্রো ট্রেনের ডিজাইন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচলে সক্ষম মিনি মেট্রো ট্রেন, স্বয়ংক্রিয় প্রবেশ এবং বহির্গমন গেইট, সচিত্র ডিসপ্লে বোর্ড, হলি আর্টিজান ঘটনায় নিহত ০৭ জন জাপানী নাগরিকের স্মরণে নির্মিত Memorial Monument ইত্যাদি
- প্রবেশ মূল্যঃ জন প্রতি ১০(দশ) টাকা। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশেষ শারীরিক চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি ও ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে প্রবেশ মূল্য পরিশোধ করতে হবে না।
