LAST UPDATED: MAR 7, 2023
Table of contents
Open Table of contents
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার রামপালে অবস্থিত একটি প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
ইতিহাস:
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে প্রথম সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয় ২০১০ সালের জানুয়ারিতে। সেখানে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সঞ্চালনের একটি প্রস্তাবনা ছিল। এর ভিত্তিতে ২০১২ সালে বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের,বাগেরহাট জেলার রামপালে দুটি ৬৬০ ইউনিট মিলে মোট ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লা-ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পড়ে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাঃ) লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) ওপর। এরপর থেকেই শুরু হয় জমি অধিগ্রহণের কাজ। প্রকল্প বাবদ খরচ ধরা হয় ১৬ হাজার কোটি টাকা।
প্রথম জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ:
গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ রাতে রামপালের প্রথম ইউনিট থেকে শুরু হয় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ। পরে ২৭ দিনের মাথায় গত ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। তবে কয়লা আমদানি শুরু হওয়ায় অবশেষে কেটে যায় সংকট।
এক নজরে রামপাল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
২x৬৬০ মেঃওঃ মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল), বাগেরহাট
প্রধান তথ্যাদি
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা:
- বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাঃ) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল)
- (বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং এনটিপিসি লিঃ, ভারত এর একটি যৌথ উদ্যোগ কোম্পানি)
ইকুইটি অংশ:
- জয়েন্ট ভেঞ্চার এগ্রিমেন্ট (JVA) স্বাক্ষর - ২৯/০১/২০১২খ্রিঃ
- ইকুইটি বিনিয়োগ - ৫০:৫০
প্রকল্পের ক্ষমতা:
- ১,৩২০ (২×৬৬০) মেগাওয়াট ক্ষমতা
- প্রকল্প ব্যয় - ১৬,০০০ কোটি টাকা
অর্থ যোগান:
- ECA অর্থায়ন- ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১২,৮০০ কোটি টাকা (এক্সচেঞ্জ রেট ভেরিয়েশন ব্যতিরেকে),বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (ইক্যুইটি)- ১,৬০০ কোটি টাকা এবং এনটিপিসি লি., ভারত (ইক্যুইটি) -১,৬০০ কোটি টাকা
চুক্তি:
- বিউবো’র সহিত ২৫ বছর মেয়াদী বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষর – ২০/০৪/২০১৩ খ্রিঃ
- বাংলাদেশ সরকারের সাথে বাস্তবায়নের চুক্তি (আইএ)স্বাক্ষর - ২০/০৪/২০১৩খ্রিঃ
ইপিসি ঠিকাদার:
- ভারত হেভি ইলেট্রিক্যালস লিমিটেডঃ (BHEL), ভারত
- ইপিসি চুক্তি স্বাক্ষর- ১২ জুলাই ২০১৬ খ্রিঃ
- NTP (Notice to Proceed) ইস্যু- ২৪ এপ্রিল ২০১৭খ্রিঃ
সম্ভাব্য কমিশনিং:
- প্রথম ইউনিট (৬৬০ মেঃওঃ): ডিসেম্বর ২০২২খ্রিঃ
- দ্বিতীয় ইউনিট (৬৬০ মেঃওঃ): আগস্ট ২০২৩খ্রিঃ
কয়লা ও লাইমস্টোন ক্রয়
- প্রকল্পের কমিশনিং ও প্রাথমিক পর্যায়ে চালুর জন্য কয়লা ক্রয়ের চুক্তির আওতায় কয়লা সরবরাহ করা হচ্ছে;
- দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় ৮০ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা ক্রয়ের জন্য দরপত্র মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া চলমান আছে;
- পরিবেশ সুরক্ষায় সালফার দূরীকরণের জন্য ১.০৩ লক্ষ মেট্রিক টন লাইমস্টোন ক্রয়ের চুক্তির আওতায় লাইমস্টোন সরবরাহ করা হচ্ছে।
প্রকল্পের অগ্রগতিঃ
- নভেম্বর-২০২২ খ্রিঃ পর্যন্ত প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি ৮৯.৫৮% ও আর্থিক অগ্রগতি ৭৮.৫৩ %।
- প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় ১২,৫৬৫.২৭ কোটি টাকা (এক্সচেঞ্জ রেট ভেরিয়েশন ব্যতিরেকে)।
প্রকল্পের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ২৮-১২-২০২২ খ্রিঃ পর্যন্ত অগ্রগতি
ইউনিট #১:
৭২ ঘন্টা ফুল লোড অপারেশন (যার মধ্যে ৬ ঘন্টা ডিপেন্ড্যাবল ক্যাপাসিটি টেস্ট বিউবোর কমিটি কর্তৃক পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে) সহ ১৬৮ ঘন্টা রিলায়েবিলিটি রান টেস্ট (RRT) গত ২২-১২-২০২২ তারিখে সম্পন্ন হয়েছে এবং গ্রীডের নির্দেশনা মোতাবেক ইউনিটটি পরিচালনা করা হচ্ছে। বাবিউবো কর্তৃক ইউনিট#১ COD অর্থাৎ প্রকল্পের IOD ঘোষণা করা হবে।
ইউনিট #২:
বয়লার ড্রেইনেবল হাইড্রো সার্কিট এর হাইড্রোটেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। টার্বাইন জেনারেটর-২ এর বক্স-আপ সম্পন্ন হয়েছে এবং অয়েল ফ্লাশিং চলমান আছে। বয়লার, ইএসপি, এফজিডি, মেইন পাওয়ার হাউজ ও উভয় ইউনিটের অবশিষ্ট কমন সিস্টেমের কাজ চলমান আছে।
পাওয়ার ইভাকুয়েশন এর নিমিত্ত ২৩০ কেভি রামপাল- খুলনা ডাবল সার্কিট ট্রান্সমিশন লাইন (২৪ কি.মি.) এবং ৪০০ কেভি রামপাল- গোপালগঞ্জ- আমিনবাজার ডাবল সার্কিট ট্রান্সমিশন লাইন (১৭৩.৫ কি.মি.) এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পিজিসিবি কর্তৃক লাইন চার্জিং সম্পন্নের পরে কেভি লাইনে ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ৪০০ কেভি লাইনে পাওয়ার ইভাক্যুয়েশন শুরু হয়েছে।
ইতোপূর্বে, ০৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ পায়রা-গোপালগঞ্জ-রামপাল ৪০০ কেভি লাইন দিয়ে অত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইন্টার-কানেক্টিং ট্রান্সফর্মার (আইসিটি)#১ ও সুইচইয়ার্ড এর মাধ্যমে ২৩০ কেভি খুলনায় সরবরাহ করা শুরু হয়েছে এবং ৪০০ কেভি গোপালগঞ্জ- আমিনবাজার লাইন চালুর পূর্বে ইউনিট#১ এর পাওয়ার ২৩০ কেভি খুলনাতে সরবরাহ করা হয়েছে।
তথ্যসুত্র: বিবিসি, সময় টিভি ও বিদ্যুৎ বিভাগ