প্রাচীন গ্রীস সভ্যতা অনেক কিছুরই জনক।আমি যখন বিতর্ক নিয়ে ব্লগ লিখব ভাবলাম তখন মনে হল এর ইতিহাস নিয়ে কিছুটা ঘাটানো যাক। গাধা যেমন ঘোলা করে জল খায় , আমার ব্যাপারটাও তেমন হল ।
তো সক্রেটিস যুগের পুর্বে প্রভাবশালী দার্শনিক সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে ‘সফিস্ট’ ছিল অন্যতম । সফিস্ট ইংরেজিতে ‘Sophists’ , গ্রীক শব্দ ‘sophós’ থেকে, যার অর্থ জ্ঞানী মানুষ। এদের ৫০০ অব্দের শেষের দিকে জনপ্রিয় হতে দেখা যায়। এরা মূলত শিক্ষক এবং পেশাদার তার্কিক। তো বিতর্কের সূচনাতে এদের কিছুটা প্রভাব থাকতে পারে , এটি ধারনা করা হয় । এদের দর্শনগুলো সক্রেটিস ও তার শিষ্য প্লেটোর দ্বারা সমালোচিত হয় । Wikipedia থেকে জানতে পারি সক্রেটিসএর দর্শ্ন সমন্ধে ।সক্রেটিস দার্শনিক জেনোর মত দ্বান্দ্বিক পদ্ধতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। এই পদ্ধতিতে প্রথমে প্রতিপক্ষের মত স্বীকার করে নেয়া হয়, কিন্তু এর পর যুক্তির মাধ্যমে সেই মতকে খণ্ডন করা হয়। এই পদ্ধতির একটি প্রধান বাহন হল ‘প্রশ্ন-উত্তর’। সক্রেটিস প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমেই দার্শনিক আলোচনা চালিয়ে যেতেন। প্রথমে প্রতিপক্ষের জন্য যুক্তির ফাঁদ পাততেন এবং একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকতেন। যতক্ষণ না প্রতিপক্ষ পরাজিত হয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে নেয় ততক্ষণ প্রশ্ন চলতেই থাকতো। সক্রেটিসের এই পদ্ধতির অপর নাম ”সক্রেটিসের শ্লেষ (Socratic irony)”-তো এই ব্যাপারটির সাথে বিতর্কের কিছুটা মিল পাওয়া যায় ।এটি খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০ – খ্রিস্টপূর্ব ৩৯৯ সময়কার কথা যখন তিনি বেঁচে ছিলেন।
সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ থেকে ৩৮৪ সাল , প্রাচীন গ্রীক।
প্রাচীন গ্রীসে বিতর্ক শেখার প্রতিষ্ঠান ছিল । সেখানে বিতর্ক শেখানো হত ।এর কারণ হিসেবে দেখা যায় যে তখন প্রাচীন এথেন্সে একটা প্রচলিত প্রথা ছিল যে , কোন নাগরিকের দায়ের করা মামলা নিজেকেই পরিচালনা করতে হত অথবা নিজেকে অপরাধ থেকে মুক্ত করার জন্য ও নির্দোষ প্রমানের জন্য যুক্তি , প্রমান উপস্থাপনা করতে হত । ব্যপারটি এমন ছিল।
এরকম কারনে আমরা মানতে বাধ্য হই যে প্রাচীন গ্রীসেই বিতর্কের সুচনা হয় । দেখা যায় যে বিতর্ক শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক বিখ্যাত বক্তা , বিতার্কিক তৈরি করেছিল । তারা আবার মানুষকে স্ক্রিপ্ট লিখে দিতেন মামলা পরিচালনা করার জন্য । পরবর্তীতে এই মানুষগুলি থেকেই যে উকিল বা আইনজীবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে…
এই সব বিখ্যাত বক্তাদের মধ্যে কিছু মানুষের নাম জানা যায় , তাদের সমন্ধেও আমরা জানব ……। (চলবে)